গতবছর বাংলাদেশে সন্ত্রাসের ঘটনা কমেছে: যুক্তরাষ্ট্র

গতবছর বাংলাদেশে সন্ত্রাসের ঘটনা কমেছে: যুক্তরাষ্ট্র

গতবছর বাংলাদেশে সন্ত্রাসের ঘটনা কমেছে: যুক্তরাষ্ট্র

বৃহস্পতিবার ২০২০ সালের ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেররিজমে’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর ঢাকার অসন্তোষের মধ্যে ইতিবাচক খবর দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতবছর ২০২০ সালে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসের ঘটনা কমার কথা বৈশ্বিক এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর; এসেছে সন্ত্রাস বিষয়ক তদন্ত ও গ্রেপ্তার বাড়ার তথ্য।

বৃহস্পতিবার ২০২০ সালের ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেররিজমে’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে পুলিশের বিশেষ দুই ইউনিট র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসিইউ) এর কার্যক্রমসহ সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সিটিটিসিইউ ও র‌্যাব বিদেশের সঙ্গে যুক্ত জঙ্গি বা সন্ত্রাসীদের (ফরেন টেরোরিস্ট ফাইটার- এফটিএফ) গ্রেপ্তার বা তাদের বিষয়ে অনুসন্ধনে আমূল সংস্কার ও পুর্নবাসন কর্মসূচির পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

প্রতিবেদনে যে তিনটি সন্ত্রাসী ঘটনার কথা তুলে ধরা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে আইইডি বিস্ফোরণ, ৩১ জুলাই নওগাঁয় হিন্দু মন্দিরে হাতবোমা পুঁতে রাখা এবং ২৪ জুলাই গুলশানে পুলিশের মটরসাইকেলে আইইডি রাখার ঘটনা রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও নওগাঁর ঘটনার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএস)। চট্টগ্রামে দুই পুলিশ ও একজন সাধারণ লোক আহত হলেও নওগাঁর ঘটনায় কোনো হতাহত নেই।

“গুলশানে পুলিশের মটরসাইকেলে আইএস-সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর আইইডি রাখার কথা বলা হলেও পরে তা ভুয়া হিসাবে ধরা দেয়।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএস ও আল কায়েদার মত আন্তঃরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশি সন্ত্রাসীদের যোগাযোগ থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে বাংলাদেশ সরকার।

জঙ্গিদের বিষয়ে বাংলাদেশের 'শূন্য সহিষ্ণুতার' নীতি নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। তবে একইসঙ্গে বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মামলা ঝুলে থাকার কথাও বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, সীমান্ত ও বন্দরগুলোতে নিয়ন্ত্রণ জোরালো করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ।

“ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন। টহলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষিত বিস্ফোরক শনাক্তকারী কে-নাইন টিম সেখানে থাকলেও বিমানবন্দরে তাদের অবস্থান স্থায়ী নয়।”

প্রতিবেদনের বিষয়ে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, “সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর অন্তর্নিহিত বিষয়াদি তুলে ধরে প্রতিবছর প্রকাশিত কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেররিজম।

“এটি যুক্তরাষ্ট্রকে নীতি, কর্মসূচি ও সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে তথ্যসমৃদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে; যার মাধ্যমে আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক সক্ষমতা ও সহনশীলতা তৈরি করতে চাই।”

এতে বাংলাদেশে ওই বছর তিনটি সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণক্ষয় হয়নি বলে জানানো হয়।

এর আগে, গত ১১ ডিসেম্বর র‍্যাবের ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে এ বাহিনী, এর সাবেক প্রধান, বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদসহ সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও পররাষ্ট্র দপ্তরের সেদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। 

এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করে। এছাড়া ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়। এই পদক্ষেপকে ‘খুবই দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে ফোনালাপের সময়ও প্রসঙ্গটি তোলেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার এমন খবর প্রকাশের মধ্যে রাতে বাংলাদেশ নিয়ে ইতিবাচক তথ্য প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এ প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/185157/গতবছর-বাংলাদেশে-সন্ত্রাসের-ঘটনা-কমেছে-যুক্তরাষ্ট্র